প্রেস রিলিজ প্রথমেই ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের ছাত্রজনতার ঐতিহাসিক বিজয়ের অর্জনে মহান আত্মত্যাগ ও শহীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। জুলাই বিপ্লবের স্বপ্ন ছিলো একটি বৈষম্যহীন, সমৃদ্ধ ও দক্ষতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মান করা।
“তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় ” সাবেক, বর্তমান ও নবীনদের প্রাণের দাবি। একটি বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় এটি রাষ্ট্রের অন্যতম জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র । যেখানে রাষ্ট্র বির্নিমানে জ্ঞান উৎপাদন ও চর্চা করা হয় । ঢাকা উত্তর সিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলে তা রাষ্ট্র বিনির্মানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারতো ।
বিগত ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৭ টি বছর ঢাবির অধিভুক্ত থাকা অবস্থায় ঢাবি গুণগত মানসম্পন্ন ও দক্ষতাভিত্তিক যে উচ্চশিক্ষা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলো এবং আমরা যেই মানের উচ্চ শিক্ষার প্রত্যাশা করেছিলাম তার অধিকাংশই পূরণ হয় নাই। সেই সাথে আমরা এটিও উপলব্ধি করেছি যে, আমরা যে গুণগত মানসম্পন্ন উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখি তা স্বতন্ত্রভাবে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ব্যতীত অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থেকে অর্জন করা সম্ভব নয়।
তাই, সরকারি তিতুমীর কলেজকে “তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়” হিসেবে রূপান্তরের কোনো বিকল্প নাই । তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের জন্য ১৯৯৭-২০২৪ প্রায় তিন যুগ ধরে আন্দোলন সংগ্রাম চলমান । ঢাকা উত্তর নগরীতে উচ্চ শিক্ষার মান নিশ্চিতের লক্ষ্যে সরকারি তিতুমীর কলেজ কে “তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়” রুপান্তর করা আব্যশিক হয়ে দাড়িয়েছে এখন ।
ঢাকা উত্তর সিটির নাগরিক জীবন উন্নতীকরণ হতে শুরু করে দেশের শিক্ষা খাতে জিম্মি ব্যবস্থা ভাঙতে,উচ্চ শিক্ষার দ্বার উন্মোচনের লক্ষ্যে “তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠার আবশ্যকীয়তা দেখা দিয়েছে । কতৃপক্ষ “তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়” বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতি বছর হাজার হাজার বেকার তৈরীর কারাখানা বন্ধ করে বাস্তবসম্মত্ব, যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যাবস্থা নিশ্চিতের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি রাষ্ট্রকে উপহার দিতে পারে ।
তারই প্রেক্ষাপটে ১৯৯৭,২০০৫,২০০৮,২০১১,২০১৪ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে রাষ্ট্রের কাছে বারংবার দাবি জানিয়ে আসছে তিতুমীরিয়ানরা । সর্বশেষ ২০২৪ সালের আগস্ট মাস থেকে এই পর্যন্ত আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছি যার উল্লেখযোগ্য কিছুি হলো|
১. ক্যাম্পাসে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছে ।
২. গত রবিবার, ২২ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে একটি শান্তিপূর্ণ র্যালি এবং মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
৩. গতকাল ২৫ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
৪. পরবর্তী ধাপে, আগামী ২৯ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং রবিবার শিক্ষা উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার নিকট স্মারকলিপি জমা করা হয়েছে।
৫. গত ৫ নভেম্বর ” বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী ” যা এখনো চলমান এবং ১০ নভেম্বর ” ডেথ অব এডুকেশন ” কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।
আমরা শুধু তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে নয় বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক আমরা রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা , মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা সহ দায়িত্ববান সকলের নিকট ৯৪ পেইজের স্মারকলিপি সহ ফাইল হস্তান্তর করেছি।
আমরা স্পষ্ট বলতে চাই জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয় । আমরা সব সময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার চেষ্টা করেছি। আমরা চেষ্টা করেছিলে যথাসম্ভব ক্যাম্পাসে অবস্থান করার জন্য । কিন্তু যখন শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনরূপ বাক্য ব্যয় করে না তখন শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমে আসে। আজ শিক্ষার্থীরা রাজস্তায় নেমে আসলে এর জন্য শিক্ষার্থীরা দায়ী নয় বরং সেই সকল ব্যক্তিবর্গ বা কর্তৃপক্ষ দায়ী যারা শুনতে চান না শিক্ষার্থীরা কি চায় এবং তাদের সঙ্গে বসতে চান না, শিক্ষার্থীদের বুঝতে চান না।
বারংবার তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে কতৃপক্ষ ইতিবাচক সাড়া দেয়নি । তারই ফলস্রুতিতে ৩ দফা দাবি নিয়ে তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ৭২ ঘন্টা সময় বেধে দিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ।
এর মধ্যে সরকারি তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে রাষ্ট্র কোনোরুপ যোগাযোগ স্থাপন না করেই সাত কলেজ সংস্কারের জন্য নতুন কমিটি ঘোষনা করে । যা তিতুমীরিয়ানদের ব্যাথিত করে এবং তিতুমীরিয়ানরা তা সম্পূর্ণরুপে প্রত্যাখ্যান করে।
কমিটি গঠনের ৭২ ঘন্টা পার হয়ে যাওয়ার পরও তারা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করায় তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা এই কমিটিকে “টাইম আউট” বলে ঘোষনা করে ।
৩ দফা দাবি নিয়ে আবারো বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে তিতুমীরিয়ানরা ।
নিম্নোক্ত ৩ দফা-
১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বাতিল করে ৭ কলেজ থেকে তিতুমীর কলেজকে পৃথক করতে হবে।
২। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তরের লক্ষ্যে কমিশন গঠন করতে হবে।
৩। তিতুমীর কে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের রুপরেখা প্রনয়ণ করতে হবে ।
রাষ্ট্রের যথাযথ কর্তৃপক্ষ তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহন করে না তখন শিক্ষার্থীরা কঠোর কর্মসূচির ডাক দিতে বাধ্য হয়। সাধারন শিক্ষার্থীরা “তিতুমীর ঐক্য’র” ব্যানারে পূর্ব ঘোষিত চলমান কর্মসূচি “ বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী “ কর্মসূচি আগামী ১৮/১১/২৪ ইং, সোমবার, সকাল ১১ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত পালন করবে। সড়ক ও রেল যোগাযোগ এই ব্যারিকেডের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই ব্যারিকেড তিতুমীর বিশ্বিবদ্যালয় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত চলমান থাকবে।